আমরা যখন স্বাস্থ্যকর খাবারের কথা ভাবি, তখন আমাদের মাথায় খেজুরের কথা আসে না। খেজুরের রয়েছে অনেক গুণ। প্রতিদিন যদি কেউ খেজুর কান তাহলে তার শরীরে এবং ত্বকে চমৎকার কিছু পরিবর্তন ঘটবে। বিশ্বাস না হলে এক টানা ২১ দিন কেউ খেজুর খেয়ে দেখুন।
 |
খেজুর খাওয়ার উপকারিতা |
প্রতিদিন সকালে অন্তত দুই থেকে তিনটি খেজুর খেলে কোন রোগ আপনার কাছে আসবে না। এই শক্তিবদ্ধ ফল খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি এর পুষ্টিগুণও অনেক। তাহলে চলুন জেনে নেই খেজুরের কিছু অজানা গুনাগুন সম্পর্কে।
খেজুর খাওয়ার উপকারিতা কি?
কোলেস্ট্রল এবং ফ্যাট
খেজুরে কোন রকম কলেজ ট্রল বা বাড়তি কোনো রকম চর্বি থাকে না। যার ফলে আপনি যখন সহজেই খেজুর খাওয়া শুরু করবেন, তখন অন্যান্য ক্ষতিকর এবং চর্বি জাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকতে পারবেন।
প্রোটিন
আমাদের শরীরে প্রোটিন একটি অত্যাবশ্যকীয় প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। আর খেজুর হলো প্রোটিন সমৃদ্ধ একটি ফল। ফলে আমাদের পিসি গঠন করতে সহায়তা করে এবং শরীরের জন্য অপরিহার্য প্রোটিন সরবরাহ করে।
ভিটামিন
খেজুরের রয়েছে ভিটামিন যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যাবশ্যক। ভিটামিন বি ১, ভিটামিন বি ২, ভিটামিন বি ৩ এবং ভিটামিন বি ৫। এছাড়াও ভিটামিন এ ১ এবং ভিটামিন-সি পাওয়ার আরো একটি সহজ মাধ্যম হচ্ছে খেজুর। খেজুর দৃষ্টিশক্তি বাড়ায় এবং সেইসঙ্গে রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করতে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
আয়রন
আয়রন মানবদেহের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। খেজুরে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে। ফলে এটি হৃদপিন্ডের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তাই যাদের দুর্বল হৃদপিণ্ড, তাদের জন্য খেজুর হতে পারে সবচেয়ে নিরাপদ ঔষধ।
ক্যালসিয়াম
ক্যালসিয়াম হাড় গঠনে সহায়ক। আর খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। যা হাড়কে মজবুত করে। খেজুর শিশুদের মাড়ি শক্ত করতে সাহায্য করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ
খেজুর পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এবং প্রাকৃতিক আসে পরিপূর্ণ। গবেষণায় দেখা যায় খেজুর দেহের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। যারা নিয়মিত খেজুর খান তাদের বেলায় ক্যানসারের ঝুঁকি অনেক কম থাকে। খুব সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, খেজুর এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যানসার রোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। এবং অবাক করার বিষয় হচ্ছে খেজুর অনেক সময় ওষুধের থেকেও ভালো কাজ করে।
রক্তশূন্যতা
প্রচুর পরিমাণে মিনারেল এবং সাথে আয়রন থাকার জন্য খেজুর রক্তশূন্যতা দূর করে। তাই যাদের শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম তারা প্রতিদিন খেজুর খেয়ে দেখতে পারেন।
কর্মশক্তি
খেজুরে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক চিনি থাকার কারণে খেজুর খুব দ্রুত কর্মশক্তি বৃদ্ধি করতে পারে। সারাদিন রোজা রাখার পর যদি আপনি ২টি খেজুর খান, তাহলে খুব দ্রুত কেটে যাবে আপনার ক্লান্তি এবং শারীরিক দুর্বলতা।
স্নায়ুতন্ত্রের কার্যক্ষমতা
খেজুরের নানা ভিটামিন পরিপূর্ণ থাকার কারণে খেজুর মস্তিষ্কের চিন্তা ভাবনার গতি বৃদ্ধি করে থাকে এবং স্নায়ুতন্ত্রের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে যারা ছাত্র ছাত্রী নিয়মিত খেজুর খায়, তাদের দক্ষতা অন্যদের তুলনায় খুব ভালো থাকে।
শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি দূর
প্রতিদিন ২টি খেজুর খেলে এর মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক চিনি আপনার রক্তের সঙ্গে মিশে আপনার শরীর ও মনকে চাঙ্গা করে তুলবে। ফলে আপনি পাবেন শরীর ও মনের প্রশান্তি।
পেটের অসুখ সারাতে
খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। তাই প্রতিদিন খেজুর খেলে আপনার পেটের বিভিন্ন অসুখ সেরে উঠতে পারে। সেই সাথে আপনার বদ হজমের সমস্যা দূর করতে অসাধারণ ভূমিকা রাখে এই খেজুর ফল।
হার্টের ক্ষমতা বৃদ্ধি
খেজুর ডায়েটারি ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে শরীরের বিভিন্ন খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা ধ্বংস করে থাকে। ফলে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে না।
ত্বকের উন্নতি
খেজুরে থাকা ভিটামিন ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করে এবং ত্বক মসৃণ রাখে। নিয়মিত খেজুর খেলে আপনার মুখের বয়সের ছাপ দূর করবে। এই শক্তিবর্ধক ফল আপনার শরীরে মেলানিন জমে যাওয়া রোধ করতে সহায়তা করবে। যার ফলস্বরূপ বার্ধক্যের রোগগুলো মোকাবেলায় সহায়তা করবে। শুধু তাই নয় ব্রন কমাতে খেজুর খেতে পারেন।
[ আরো দেখুন : কাঁচা ডিম খাওয়ার উপকারিতা ]
আপনার খাদ্যে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য খেজুর খুবই স্বাস্থ্যকর একটি ফল। খেজুরে তাকা পুষ্টি উপাদান ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সময়ের পরিমাণ বেশি থাকে। তাই হজম ভালো হয় এবং বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি হ্রাস পায়। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় খেজুর রাখুন এবং সুস্থ থাকুন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন