পেটের মেদ বা চর্বি জমলে যেমন কষ্ট হয় তেমনি নষ্ট হয় শরীরের সৌন্দর্য। অনেকেই আছে যারা খুব বেশি মোটা না কিন্তু শরীরের কিছু কিছু অংশের মেদ জমার কারণে অস্বস্তি বোধ করেন। কোন ভালো পোশাক পড়লেও ভালো দেখায় না।

ওজন কমানোর উপায়
ওজন কমানোর উপায়


আপনার অতিরিক্ত ওজন আপনার হূদরোগ, ডায়াবেটিস, হার্ট অ্যাটাক, কোলেস্টেরল ইত্যাদি হওয়ার আশংকা বাড়িয়ে দেয়। আপনার পেটের আকার বাড়ার সাথে সাথে আপনার টেস্টোস্টেরন, ইনসুলিন এর মত হরমোন গুলোর উপর বিভিন্ন নেগেটিভ প্রভাব পড়তে থাকে। আপনি চাইলেই আপনার চর্বিতে সহজেই ধরে রাখতে পারবেন কিন্তু আপনি চাইলেই এটাকে সহজে দূর করতে পারবেন না। আর এটি যতদিন যাবে আপনার বেতন নানা সমস্যা তৈরি করতে থাকবে। তবে সুখবর হচ্ছে কয়েকটি নিয়ম মেনে চললে আপনি এই পুরো পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে পারবেন।


ওজন কমানোর উপায়


সকালে খালি পেটে লেবু মধু পানি পান করুন। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে লেবুপানি পান কার্যকর একটি পদ্ধতি বিশেষ করে যারা পেটের চর্বি দূর করতে চান। তবে এক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি দিক নজর রাখতে হবে। সকালে খালি পেটে লেবু পানি পান করার সাথে সাথে দরকার সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত ব্যায়ামের পাশাপাশি এই পানীয় পান করা। এতে আপনার ওজন কমে যাবে। আবার অস্বাস্থ্যকর খাবার, ফাস্টফুড ও অতিরিক্ত ক্যালরি যুক্ত খাবার খেয়ে লেবু পানি পান করলে কোন ফলই আসবেনা। গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিদিন সকালে ৪০০ মিলি লিটার পানি পান করলে তা বিপাক ক্রিয়ার হার বাড়িয়ে দেয়। যা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং কমাতে সাহায্য করে। সাধারণত সকালে খালি পেটে কিংবা রাতে ঘুমানোর আগে লেবু জল পান করতে পারেন। এক গ্লাস পানিতে ২ চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে এবং তাতে এক চামচ মধু মিশিয়ে পান করতে পারেন।

সকালের নাস্তা বাদ দেওয়া যাবে না। সকালের নাস্তা খেয়ে দিনের গুরুত্বপূর্ণ খাবার বলা হলেও ঘুম থেকে উঠে আমরা অনেকেই নানা কারণে নাস্তা না খেয়ে দিন শুরু করি। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কখনোই সকালের নাস্তা বাদ দেওয়া উচিত নয়। যারা সকালের নাস্তা খায় তাদের ওজন দ্রুত কমে। আপনি যদি দুপুরের খাবারের সময় সকালের নাস্তা খান তাহলে তখন আপনি অনেক বেশি ক্ষুধা তো থাকবেন এবং তখন বেশি খাওয়া হয়। এর ফলে ওজন বৃদ্ধি পায়। 

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওটমিল খেতে পারেন। প্রতিদিন সকালের নাস্তায় যদি ওটমিল খেতে পারেন, তাহলে এটি আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে খুব বেশি সাহায্য করবে। কারণ ওটমিল আঁশজাতীয় খাবার। সকালের নাস্তায় ওটমিল খেলে দীর্ঘক্ষন ক্ষুধাবোধ হয় না। ফলে অতিরিক্ত খাবার খেয়ে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা কমে যায়। এছাড়াও ওটমিল হাটে সুস্থতা বজায় রাখে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। ওটমিলে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, জিংক সহ নানা পুষ্টি উপাদান। যা শারীরিক সুস্থতার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। যারা ওজন নিয়ন্ত্রণে করতে চান তাদের জন্য ওটমিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

নির্দিষ্ট সময়ে খাওয়ার অভ্যাস করা। একটি ভুল ধারণা অনেকের মধ্যেই প্রচলিত আছে যে, দুপুরে বাড়াতে না খেলে ওজন কমে যায়। কিন্তু এক বেলা খাবার না খেলে যেমন শারীরিক দুর্বলতা বোধ করা কিংবা পুষ্টির ঘাটতি হওয়া তেমনি ক্ষুধার কারণে অতিরিক্ত চিনি কিংবা চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। দ্রুতহারে ক্যালরি বার্ন করতে চাইলে কোন বেলার খাবার না বাদ দিয়ে সঠিক সময়ে খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করা উচিত। নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খেলে খুদা, হজম শক্তি এবং অভ্যন্তরীণ পরিপাক কার্যক্রম একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে। যার ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়। এই অভ্যাসের ফলে শরীরে ইনসুলিন কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।


ওজন কমানোর জন্য যেভাবে খাবার খাওয়া উচিত


আপনি যদি আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চান, তাহলে নিম্নে উল্লেখ করা সময়গুলো অনুসরণ করুন। মাত্র ২১ দিন এই নিয়মগুলো মেনে চললে আপনি ফলাফল নিজের চোখেই দেখতে পারবেন।

সকালে খালি পেটে লেবু পানি পান করার পর, চাইলে আপনি চা কিংবা দুধ ছাড়া কফি পান করতে পারেন। এরপর আটার রুটি এবং সবজি সেদ্ধ এবং কাঁচা শসা এর সাথে ওটমিল খেতে পারেন। দুপুরের খাবারে একটি ডিমের সাদা অংশটকজাতীয় ফল খেতে পারেন। দুপুরের খাবারে এক কাপ ভাত এবং এক বাটি শাকসবজি, মুরগি অথবা মাছ ১ টুকরো, ডাল এবং সালাতের পাশাপাশি চাইলে টক দই খেতে পারেন। বিকেলে চাইলে মুড়ি অথবা বিস্কুট খেতে পারেন, পাশাপাশি যেকোনো এক ধরনের ফল খাবেন যেমন : কলা, কমলা, আপেল, আঙ্গুর, পেয়ারা, আম যেকোনো একটি। সন্ধ্যার দিকে গ্রিন টি, কয়েকটি পাউরুটি অথবা ২ পিস বিস্কুট খেতে পারেন। রাতে ভাত ১ কাপ অথবা ৩ পিস রুটি সঙ্গে সবুজ শাকসবজি আর মাছ খেতে পারেন। খাবারের সময় অবশ্যই পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। বেশি পরিমাণে পানি পান করলে আপনার ওজন কমে যাবে এমনটা নয়। কিন্তু মানুষ অনেক সময় কিদা এবং তৃষ্ণা মধ্য পার্থক্য করতে পারে না। আর সে সময় অনেকেই বেশি পরিমাণে খাবার খেয়ে ফেলে। ফলে শেষ পর্যন্ত গ্রহণ করা হয়ে যায় অতিরিক্ত ক্যালরি। তাই সময় ছাড়া ক্ষুধা পেলে পানি পান করুন।


আপনি যদি আপনার ওজন দ্রুত কমাতে চান তাহলে উপরুক্ত নিয়মগুলো মেনে চলতে হবে। আশা করি আপনি আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন