কোন কিছু মনে রাখার প্রয়োজনীয়তা শুধু ছাত্র জীবনেই নয়, কর্মক্ষেত্র থেকে শুরু করে সাংসারিক জীবনেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। Short Time Memory, Long Time Memory দুটোই আমাদের জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। মাঝে মাঝে মাত্র শোনা নাম ভুলে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়, তেমনি কিছুদিন আগে শেখা একটি ইংরেজী শব্দের অর্থ ভুলে গিয়ে হতে পারে নিজের উপরে অনেক রাগ।

কোন কিছু মনে রাখার সহজ ৩টি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি
কোন কিছু মনে রাখার সহজ ৩টি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি





তাই আমরা জানবো কোন কিছু মনে রাখার বৈজ্ঞানিক ৩ টি কৌশল সম্পর্কে। যার মাধ্যমে আপনি কোন কিছু খুব সহজেই মনে রাখতে পারবেন


১/ Sleep Sandwich পদ্ধতি

কল্পনা করুন আপনার খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি উপস্থাপনা আছে। এবং প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য মাত্র এক দিন সময় হাতে আছে। এই অল্প সময়ে কিভাবে এত তথ্য মনে রাখবেন। অনেকেরেই এই পরিস্থিতিতে খুব চিন্তা হয়ে থাকে। তারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিক্ষিপ্তভাবে এটা সেটা দেখে থাকে এবং এভাবে অনেক রাত হয়ে যায়। কিন্তু পরের দিন ৫০ ভাগেরও বেশি ভুলে যায়। জোর করে যা আগের রাতে মস্তিষ্কের ভিতরে ঢুকিয়ে ছিল। সেগুলো এখন কিছুই মনে পড়ছে না। তো এটি কেন হয়? এর কারণ হলো এই তথ্যগুলো আপনার Long Time Memory তে জায়গা পায়নি।

আপনি আপনার মস্তিষ্ককে অনেক কিছুই চাপিয়ে দিতে পারবেন। তবে কিছু অল্প পরিমাণ তথ্য মনে রাখতে পারবে। এর কারণ আপনারই তথ্য মস্তিষ্কে সংরক্ষণ করে রাখার জন্য নির্দিষ্ট কিছু সময় প্রয়োজন আর এটি হলো রাতজেগে প্রস্তুতি নেওয়ার একটি অসুবিধা। আপনি আপনার মস্তিষ্ককে কোন সুযোগই দিচ্ছেন না। আর এই কারনেই বিজ্ঞানীরা 'Sleep Sandwich' পদ্ধতি ব্যবহার করতে বলেছেন। একটানা অনেক কিছু পড়ার চেয়ে, আপনি যদি কিছু সময় পড়েন। একটু ঘুমান, আবার পড়েন তবে আপনি খুব দ্রুত মনে রাখতে পারবেন। কারণ ঘুম আপনাকে অনেক বেশি তথ্য মস্তিষ্কে সংরক্ষণ করতে সাহায্য করে। আর ভালো ঘুম Long Time Memory কার্যকর করতে একটি ভালো উপায়। যখন আপনার বিবেকের মন ঘুমায় তখন আপনার অবচেতন মন Memory করার কাজে ব্যস্ত থাকে।


২/ Early Sleep পদ্ধতি

একজন জার্মান বিজ্ঞানী একটি গবেষণায় প্রকাশ করেছে যে, আমরা যখন কোন কিছু মুখস্ত করি, তখন তার এক ঘণ্টা পর সেই পড়ার ৪৪% আমাদের মনে থাকে। এবং এর এক দিন পর ৩০% পড়া মনে থাকে। আর এক সপ্তাহ পর মাত্র ২০% তথ্য খেয়াল থাকে। অর্থাৎ মাত্র এক সপ্তাহ পর আমরা সেই পড়াটির ৮০% তথ্যই ভুলে যায়। বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছে আমরা যখন কোন কিছু মুখস্ত করি, তখন সেটি Short Time Memory তে সংরক্ষণ হয়। আর এই Short Time Memory থেকে Long Time Memory তে যাওয়ার জন্য সবথেকে বড় ভূমিকা রাখে ঘুম। আমরা জানি ৭ ঘণ্টা ঘুম আমাদের জন্য জরুরী।

তবে ঘুমানোর সময় নিয়ে বর্তমানে অনেক সমস্যা রয়েছে। আমরা সাধারণত অনেক রাত পর্যন্ত পড়াশোনা করে পরে ঘুমাতে যাই। এর ফলে আমাদের স্মৃতি শক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গবেষণায় দেখা গেছে রাত আটটার থেকে নয়টার ভিতরে ঘুমিয়ে পড়ে এবং সকাল তিনটা থেকে চারটা ভেতরে ঘুম থেকে উঠে যদি পড়া যায়, তবে মনে রাখার ক্ষমতা কয়েক গুণ বেড়ে যায়।


৩/ Interference Theory

আপনার মনোযোগ এক বিষয় থেকে অন্য বিষয়ে করুন। উদাহরণস্বরূপ আপনি বিজ্ঞানের কোন একটি বিষয় নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ১৫ মিনিট যাবত্ এটি চর্চা করছেন। এবার তাহলে একটু বিশ্রাম নিয়ে নিন। এভাবে প্রতি ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর পর কমপক্ষে পাঁচ মিনিট বিশ্রাম নিন। এতে মনোযোগ পুনরায় তৈরি হবে। গবেষণায় এসেছে একজন মানুষ টানা ৬০ মিনিট পড়তে পারলে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ লাইন মনে রাখতে পারে। এবং পড়ার ২০ মিনিট অন্তর অন্তর ৫ মিনিট বিশ্রাম নিয়ে পড়লে ১০০ থেকে ১২০ লাইন মনে রাখতে পারে। আর যারা সারা দিন একটানা পরে তাদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো পরামর্শ হচ্ছে, বিশ্রামের সময় সম্পূর্ন ভিন্ন কিছু করা। যেমন : গান করা, ঘুমানো বা খেলাধুলা করা ইত্যাদি।




আপনার যদি কোন কিছু মনে রাখতে না পারেন তাহলে উপরে তিনটি পদ্ধতি থেকে অন্তত যদি একটি পালন করেন, তাহলে আপনি আপনার মনে রাখার ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারবেন।

2 মন্তব্যসমূহ

  1. খুব সুন্দর ও দরকারি একটি টিউটোরিয়াল

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. ধন্যবাদ, আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।

      মুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন