স্বাভাবিকের চেয়ে কম ওজন দৈনন্দিন সমস্যার একটি বড় কারণ। ভুক্তভোগীরা দ্রুত ওজন বাড়ানোর জন্য নানা ধরনের কৌশল অবলম্বন করে। যারা এই সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য মোটা হওয়ার সহজ উপায় সম্পর্কে জেনে নিন। আশা করি এরপর আপনার আর মোটা হওয়ার জন্য কোন কিছু জানার প্রয়োজন হবে না।

ওজন বাড়ানোর উপায়
ওজন বাড়ানোর উপায়


কোন রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই মোটা হওয়ার একটি নিখুঁত পরিকল্পনা আপনার সামনে উপস্থিত করছি। তাই ধৈর্য ধরে সম্পূর্ণ লেখাটি পড়তে থাকুন। আশা করি আপনি সফল হবেন।

যারা মোটা হওয়ার জন্য ঔষধ সেবনের কথা ভাবছেন, তারা এই কাজটি ভুলেও করবেন না। এতে করে অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। যা আপনি হয়ত নিজেই বুঝতে পারবেন না। ওষুধ খেয়ে হয়তো আপনি সাময়িক সময়ের জন্য মোটা হবেন, কিন্তু আপনি যখন ঔষধ খাওয়া ছেড়ে দিবেন তখন আবার আগের মতোই কাবু হয়ে যাবেন। এতে করে অনেকের কাছে হাসির পাত্র হয়ে যাবেন। এছাড়া ওষুধ সেবন করলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয় যেমন : লিভারে পানি জমা, হার্টের রোগ, জয়েন্টে ব্যাথা, শরীরের চামড়া ফেটে যাওয়া, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। যদি আপনাকে ওজন বাড়াতে হয়, তাহলে আপনি প্রাকৃতিক উপায়ে ছাড়া ওজন বাড়াতে পারবেন না। আর এর জন্য আপনাকে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে।


ওজন বাড়ানোর উপায়


ওজন বাড়ানোর জন্য আপনাকে উচ্চ প্রোটিন, ক্যালোরি ও চর্বিযুক্ত খাবার গুলো বেশি খেতে হবে। ফাইবার বা সহজে হজম হয় এই ধরনের খাবার গুলো কম খেতে হবে। দ্রুত খাবার হজম হয়ে থাকলে, আপনার খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে। এর পাশাপাশি ব্যায়াম করলেও ভাল ফলাফল পাবেন।

বিভিন্ন কারণে একজন মানুষের স্বাভাবিকের চেয়ে কম ওজন হতে পারে। যেমন : খাদ্যাভ্যাস জনিত, হরমোন সমস্যা, বংশগত সমস্যা, ডায়াবেটিস ( ডায়াবেটিস কমানোর উপায় ) ইত্যাদি কারণে দেহের ওজন বাড়তে সমস্যা তথা স্বাভাবিকের চেয়ে কম ওজন হতে পারে।


দ্রুত ওজন বাড়ানোর উপায়


দ্রুত ওজন বাড়ানোর প্রথম এবং প্রধান উপায় হচ্ছে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা। খাবার ধীরে ধীরে না খেয়ে তাড়াতাড়ি খাওয়ার অভ্যাস করুন। ধীরে ধীরে খেলে হজম গ্রন্থির খাবারগুলো পেটে যাওয়ার সাথে সাথে হজম করে ফেলে। সকালে পেট ভরে খেতে হবে এবং অবশ্যই বড় প্লেটে খাবেন। এটি আপনাকে বেশি খাবার নিতে এবং খেতে উৎসাহ দেবে। প্রতিবার খাওয়ার শেষে হালকা কিছু খাবেন যেমন : ফলমূল, মিষ্টি, দই ( টক দই খাওয়ার উপকারিতা ), চকলেট, বাদাম ইত্যাদি। খাবার খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে পর্যন্ত কোন পানি খাবেন না। এতে আপনার পেটের জায়গা দখল করে, ফলে আপনি বেশি খাবার খেতে পারবেন না।

বেশি বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবার খান। ক্যালোরি হলো আমাদের শরীরের শক্তির একক। যা দিয়ে কোন খাবার থেকে আমাদের শরীরে কতটুকু শক্তি পাওয়া যায় তা পরিমাপ করা হয়। সারাদিন কাজ কর্মে যে পরিমাণ ক্যালোরি খরচ করেছেন, তার দ্বিগুন পরিমান ক্যালরি যুক্ত খাবার খেতে হবে। প্রতিদিন শরীরে ৫০০ ক্যালরি জমা করলে, মাসে ২-৩ কেজি ওজন বাড়বে। আপনি যদি আরও দ্রুত ওজন বাড়াতে চান তাহলে এর চেয়ে বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবার খান। বর্তমানের সবাই জানে যে 'পিনাট বাটার' এ প্রচুর ক্যালরি থাকে। তাই ওজন বাড়াতে সবচেয়ে ভালো ঘরোয়া উপায় হল পিনাট বাটার খাওয়া। আপনি পাউরুটির সঙ্গে পিনাট বাটার খেয়ে দেখুন। তাহলে দেখবেন আপনার ওজন কত দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকবে। এছাড়াও উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার খেলে ওজন বাড়ে।

দিনে ৩ বার খাবার না খেয়ে দিনে ৬ বার খাবার খান। আপনার যদি হজমক্রিয়া এ কোন সমস্যা না থাকে তাহলে দিনে ৩ বার না খেয়ে ৬ বার খান। অথবা কিছুক্ষণ পরপর কিছু কিছু খাওয়া অভ্যাস করুন। সে ক্ষেত্রে খাবার খাওয়ার সময় একটি তালিকা করে নিতে পারেন। হালকা খাবারের সময় উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার যেমন : কলা, মাখন, মিষ্টি জাতীয় খাবার, বাদাম জাতীয় খাবার, তেলেভাজা স্বাস্থ্যসম্মত খাবার বেশি বেশি খান। রাতে ঘুমানোর আগে হালকা গরম দুধ খেতে পারেন। দুধের মধ্যে প্রচুর উচ্চমাত্রার ক্যালোরি এবং প্রোটিন রয়েছে। রাতে দেরি করে ঘুমানোর অভ্যাস থাকলে, ঘুমানোর আগে কিছু খেয়ে নিন এবং মধ্যরাত্রে ঘুম ভেঙ্গে গেলে হালকা কিছু খেতে পারেন। ( রাতে দ্রুত ঘুমানোর উপায় )

সকালে উঠে বাদাম এবং কিসমিস খেতে পারেন। শরীরের ওজন বাড়ানোর ক্ষেত্রে বাদাম এবং কিসমিস এর বিকল্প নেই। রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস ভিজিয়ে রাখুন, সকালে সেগুলো ফুলে উঠলে খেয়ে নিন। সকাল শুরু করুন বাদাম এবং কিসমিস খেয়ে। যে ভাতের মার ফালানো হয়না আশীবাদ খেতে পারেন। ভাতের মার ফেলে দিলে, ভাতের অনেকটাই স্ট্রেট চলে যায় ভাতের মারের সঙ্গে। ফলে ওজন বাড়াতে চাইলে ভাতের মার না ফালানোই ভালো। এক্ষেত্রে বিশাল উপকার হবে শরীরের ওজন বৃদ্ধি করতে।

শেষ কথা

উপরুক্ত নিয়ম গুলি মেনে চললে আশা করি আপনি আপনার ওজন বৃদ্ধি করতে পারবেন। উপরুক্ত নিয়মগুলি বিজ্ঞানসম্মতভাবে ওজন বাড়ানোর জন্য কার্যকরী হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন সংক্রামক জাতীয় সমস্যার কারণে শরীর স্বাভাবিকের থেকে কম ওজন হতে পারে। এক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন