আমরা সবাই কম বেশি আদর সাথে পরিচিত। আদা একটি উদ্ভিদ মূলজ আমরা মসলা এবং ভেষজ হিসেবে ব্যবহার করে থাকি। মূলত প্রাচীন গ্রিস এবং রোমানরা এটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করতো। কারণ আদার ঔষধি গুনাগুন সম্পর্কে তাদের বেশ ভাল ধারনা ছিল। কিন্তু বর্তমান সময়ে আমরা বিভিন্ন মসলার উপকারিতা সম্পর্কে জানি, কিন্তু অন্য কোন মসলার সাথে তুলনা হয়না আদার।

আদা খাওয়ার উপকারিতা
আদা খাওয়ার উপকারিতা



আদার রয়েছে শত গুণ। যা জানলে আপনি অবাক হবেন। আজ আমরা জানবো যদি আপনি এক মাস প্রতিদিন আদা খান, তাহলে কি ঘটবে আপনার শরীরের। সবশেষে জানবো আদা কিভাবে খেলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়।


তাহলে চলুন জেনে নিই, আদা খাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে আপনার শরীরে যা যা পরিবর্তন হবে।

আদা খাওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যেই প্রথমে আমাদের হজমক্রিয়া এর কার্যক্রম দেখানো শুরু করে দেয়। অর্থাৎ খাবার হজম করতে এবং পেটের গোলমাল সামলাতে কাজে লেগে পরে। সেইসাথে পেটে গ্যাসের সমস্যা থাকলেও সেটি দূর করতে থাকে।

আদা খাওয়ার ৩০ মিনিটের মধ্যে পেতে থাকা জিংক এবং ম্যাগনেসিয়াম শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে সহায়তা করে। সেইসাথে প্রাকৃতিক ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে। ফলে বাতজনিত ব্যাথা এবং মাথা ব্যথা থেকে মুক্তি মিলবে।

আদা খাওয়ার ১ ঘন্টা পরে এর মধ্যে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল আমাদের শরীরে রোগ জীবাণু ধ্বংস করতে শুরু করবে। এবং সেইসাথে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে শুরু করবে। ফলে ঠান্ডাজনিত সমস্যা থেকে পরিত্রান পাবেন। সেই সাথে মুখের রুচি বৃদ্ধি পেতে শুরু করবে।

আদা খাওয়ার ৬ ঘন্টা পরে আমাদের শরীরের পুষ্টির শোষণ বৃদ্ধি করবে। ফলে আদা খেলে আমাদের শরীরের বিভিন্ন হাড়ের অংশের ব্যাথা দূর হবে। এবং কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থাকলেও সেটি দূর করতে সাহায্য করবে।

আদা খাওয়ার ১২ ঘণ্টা পর এর নির্যাস আমাদের শরীরে গ্লুকোজ শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ এবং রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে।

আদা খাওয়ার ২৪ ঘন্টা পর আপনার শরীরের টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে শুরু করবে। কারণ আধার মধ্যে রয়েছে ৭৫ এন্টি অক্সিডেন্ট। যা আপনার শরীরের হরমোন বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে আপনার যৌন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে।

আদা খাওয়ার ১ সপ্তাহ পর আপনার শরীরের রক্তে কোলেস্টরলের মাত্রা কমতে শুরু করবে। সেই সাথে আপনার অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে শুরু করবে। ফলে, শরীরের অতিরিক্ত ওজন ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করবে।

আদর্শ বোনের ১৫ দিন পর আপনার শরীর পুরোপুরি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সক্ষম হবে। আর আপনার ত্বকের বয়সের চাপ কমতে শুরু করবে। এটি আদার গুনাগুন এর মধ্যে অন্যতম। সেই সাথে আপনার লিভার কে শক্তিশালী করে তুলবে। আমাদের শরীরে থাকা ক্যান্সারের জীবাণু কে ধ্বংস করবে অর্থাৎ আদা আমাদের শরীরে ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করবে।

নিয়মিত আদা সেবনের ২১ দিন পর আপনার মাথার চুল পড়া পুরোপুরি বন্ধ করবে এবং চুলের স্বাস্থ্য উজ্জল বৃদ্ধি করবে। কারণ আদার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই, ভিটামিন এ বি এবং ভিটামিন সি রয়েছে। যেগুলো আপনার চুলের বাড়তি সুরক্ষা দেবে। সেই সাথে আপনার ত্বকের ব্রণ ওঠা বন্ধ করবে এবং ত্বক পরিষ্কার এবং মসৃণ রাখবে।

আদা খাওয়ার ৩০ দিন পর আপনার শরীরে রক্তশূন্যতা দূর করবে। সেইসাথে হৃদযন্ত্রের কার্যক্রম ঠিক রাখবে। ফলে আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি কমবে। পাশাপাশি আপনার দাঁতের সমস্যা ও দূর করবে এবং আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাও দূর হবে। আদা আপনার শরীরের অতিরিক্ত ঘাম দূর করবে এবং আপনার কন্ঠ নালী সুন্দর করবে।


এখন জেনে নেই আদা কিভাবে এবং কখন খাওয়া সবচেয়ে উপকারী?

আদা খাওয়ার সঠিক নিয়ম জানিনা বলে আমরা আধার থেকে উপকারী হতে পারি না। তাই সঠিক নিয়মে এবং পরিমাণমতো আদা সেবন করে, আরও অধিক পরিমাণে উপকৃত হতে পারি। সাধারণত ৪ জন সদস্যের একটি পরিবারে সারাদিনের রান্নাই ৫ থেকে ১০ গ্রাম আদা ব্যবহার হয়। তাই বেশিরভাগ পুষ্টি উপাদান এর গুনাগুন আমাদের ভোগ করতে সময় লেগে যায়। চাইলে আপনি চায়ের সাথে আদা খেতে পারেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে হালকা কিছু খেয়ে আদা খেতে পারেন। তবে খালি পেটে খেয়ে যদি আপনার সমস্যা না হয়ে থাকে, তাহলে আপনি খালি পেটে আদা খেতে পারেন।




তাহলে আজ থেকে অভ্যাস করুন প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ গ্রাম আদা খাওয়ার। আর সুস্থ থাকুন হাজারো রোগ ব্যাধি থেকে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন