কোলেস্টেরল কি
কোলেস্টেরল হলো এক ধরনের চর্বি জাতীয় অংশ। কোলেস্টেরল মানুষের লিভারের তৈরি হয়। কোলেস্টরেল দুই ধরনের রয়েছে। একটি হলে ভালো কোলেস্টেরল, এবং অন্যটি হলো খারাপ কোলেস্টেরল। তবে কোলেস্টেরলকে মূলত তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন : LDL, VLDL, HDL। কোলেস্ট্রল বলতেই খারাপ এরকম নয়। HDL এমন কোলেস্টরেল যা হার্টের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এছাড়াও এটি LDL নামক ক্ষতিকারক কলেস্টেরলের দেহ থেকে দূর করে। হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের মতো ভয়ঙ্কর সমস্যা কে দূর করে। খাদ্য তালিকায় কয়েকটি ফল রাখলে আমরা সহজেই দেহে HDL এর মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারি এবং নানা ধরনের জটিল রোগের হাত থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারি।
কোলেস্টেরল কমানোর উপায়
ভালো কোলেস্টেরল অর্থাৎ HDL তৈরি করার জন্য ফাইবার জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত। এদের মধ্য অলিভ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভালো করে স্টল বাড়াতে অলিভ এবং অলিভ অয়েল খুবই ভালো কাজ করে। একইভাবে আপেল, আঙ্গুর, স্ট্রবেরি এবং কমলা খাওয়া উপকারী। এইসব ফলে থাকে পেকটিন ফাইবার যা ভালো কোলেস্টেরলকে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
নারিকেল দেহে HDL এর মাত্রা বৃদ্ধি করে, তবে নারিকেল তেল বেশি না খাওয়াই ভালো। পিনাট, বাদাম HDL এর মাত্রা বাড়ায় এবং সেইসঙ্গে ক্ষতিকর LDL এর মাত্রা কমায়। এছাড়াও আপনি পেয়ারা, আম ইত্যাদি খেতে পারেন।
দেহে ভালো কোলেস্টেরল অর্থাৎ HDL এর মাত্রা 60Mg / dl বা তার বেশি থাকা ভালো। এতে ধমনীর মধ্যে ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল LDL এর আস্তরণ পড়তে বাধা দেয়। ডাক্তারদের মতে হার্ট অ্যাটাক রোধ করতে ২০ বছর বয়স থেকেই খাদ্যতালিকা বাছাই করা উচিত। এই বয়সে ভাজাপোড়া এবং উচ্চ ক্যালরি সমৃদ্ধ খাবার বেশি খাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। এই সময় যদি ডায়েট চার্টে কিছু সবজির যুক্ত করা যায় তাহলে খুব উপকার পাওয়া যায়।
ভুট্টা, মটরসুটি জাতীয় খাবার দেহের কোলেস্টেরল কমাতে বেশ কার্যকরী। রান্নার তেল হিসেবে খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে অলিভ অয়েল আদর্শ। এছাড়াও জলপাইয়ের আচার এবং চাটনি বেশ ভাল কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। সালাতে জলপাইয়ের টুকরো মিশিয়ে খেতে পারেন। বেগুন ঢেড়স জাতীয় সবজি খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।
এই প্রসঙ্গে রসুন এর কথা না বললেই নয়। দেহের খারাপ কোলেস্টেরল অর্থাৎ LDL কমাতে রসুন বেশ কার্যকর। প্রতিদিন সকালে এক কোয়া কাঁচা রসুন খেতে পারেন। রসুন খাওয়ার উপকারিতা। বিশেষজ্ঞদের গবেষণায়, রসুন LDL কমাতে বেশ কার্যকরী হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।
শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল অর্থাৎ LDL বাড়ার পেছনে খাদ্যভ্যাস অন্যতম একটি বড় কারন। অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করলে খারাপ কোলেস্টেরল বাড়ে। শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে তা কমানো বেশ কষ্টসাধ্য। তাই অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের ভুগা রোগীদের উচিত ডাক্তার অথবা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে চলা। কোলেস্টেরলের ভোগীদের অবশ্যই সময়মতো খাদ্য গ্রহণ করা উচিত। রুটিন মেনে এবং যতটুকু খাওয়া উচিত ততটুকু তাই খেতে হবে। ওজন কমানোর উপায়। প্রচুর শাকসবজি এবং ডাল জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত। প্রতিদিন ৩ লিটার জল পান করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও নিয়মিত কমপক্ষে ৩০ মিনিট শারীরিক ব্যায়াম করা উচিত। নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম এবং নিয়ম মেনে ডায়েট করলে কোলেস্টেরল কমানো সম্ভব।
কোলেস্টেরল কমাতে যে খাবারগুলো এড়িয়ে চলতে হবে
গরুর মাংস খাওয়া যাবেনা। ঘি এবং মাখন এড়িয়ে চলতে হবে। দুগ্ধজাতীয় খাবার খাওয়া যাবেনা। ডিমের কুসুম এবং মাংসে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকে। উদ্ভিদ জাতীয় খাবারে কোলেস্টরল থাকেনা। গুরুত্বপূর্ণ একটি বর্জনীয় খাবার হলো চিংড়ি মাছ। চিংড়ি মাছে ক্যালোরি এবং ফ্যাট কম থাকলেও চিংড়ি মাছে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কোলেস্টেরল। যা আমাদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক।
রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে হৃদরোগের আশঙ্কা বেড়ে যায়। তাই আমাদের খাদ্যভ্যাস সঠিকভাবে করা উচিত। উপরোক্ত কোলেস্টেরল কমানোর খাদ্য তালিকা মেনে চলা উচিত। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন