ডায়াবেটিস রোগ সংক্রামক নয়। তবে ডায়াবেটিসের কারণে শরীরে অন্যান্য রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বর্তমানে অনেক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডায়াবেটিস রোগীর রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও উপায় হলো ঔষধ, ব্যায়াম ও নিয়মিত খাদ্য গ্রহণ। সঠিক খাদ্যাভ্যাস ডায়াবেটিস রোগীর রক্তের সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও চোখ, নার্ভ অন্যান্য অঙ্গ গুলি কে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

ডায়াবেটিস কমানোর উপায়
ডায়াবেটিস কমানোর উপায়


বেশ কিছু খাদ্য রয়েছে যেগুলো আপনার খাদ্য তালিকায় রাখলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করে। এই ধরনের খাদ্য রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। তাই একজন ডায়াবেটিস রোগীর প্রথমেই প্রয়োজন সুষম আহার। তাহলে চলুন জেনে নিই, ডায়াবেটিস কমানোর উপায়

ডায়াবেটিস দুই ধরনের হয়। যেমন : ডায়াবেটিস টাইপ-১ এবং ডায়াবেটিস টাইপ-২।


ডায়াবেটিস কমানোর উপায়


সবজি বা ফল তাজা না খেলে, সবজি বা ফলের এন্টি ডায়াবেটিস প্রোপার্টিজ গুলোর কমে যেতে থাকে। তাই ডায়াবেটিস কমানোর উপায় হিসেবে টাটকা ফল ও শাকসবজি খাওয়ার চেষ্টা করুন। ব্যাথা নাশক ঔষধ এখন খুবি সাধারন হয়ে গিয়েছে। ব্যথা হলো কি হলো না তানা জেনেই ব্যাথা নাশক ওষুধ খেয়ে ফেলি। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, বেশী বেশী ব্যাথা নাশক ঔষধ খেলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে, খুব ব্যথা না পেলে ব্যাথা নাশক ঔষধ খাবেন না। ডায়াবেটিস কমানোর আরেকটি অন্যতম শর্ত হলো রাতে অন্তত ৬ থেকে ৭ ঘন্টা ঘুমানো। আপনাকে ডায়াবেটিস কমাতে হলে অবশ্যই আপনাকে রাতে নিরবিচ্ছিন্নভাবে ৬-৭ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। যদি আপনি নিরবিচ্ছিন্নভাবে রাতে ঘুমাতে পারেন তাহলে আপনি খুবই সুখী। অনেকেই রয়েছে যারা রাতে ঘুমাতে পারে না তারা এটি পড়তে পারেন, রাতে দ্রুত ঘুমানোর উপায়
 
ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকায় ফল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে কাঁচা ফলের থেকে পাকা ফল বেশ উপকারী। পাকা ফলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং অন্যান্য অ্যান্টি ডায়াবেটিক প্রপার্টিস কাঁচা ফল এর থেকে বেশি থাকে। যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আপনাকে অতিরিক্ত সাহায্য করে। আমাদের প্রতিদিনের খাবারে সঠিক পরিমাণ ক্যালরি চাই। খাবার থেকে আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় ক্যালরি পেয়ে থাকি। চিনিতে শুধুমাত্র ক্যালরি রয়েছে। ফলে আপনাকে চিনিযুক্ত খাবার থেকে দূরে থাকা প্রয়োজন। আমরা বিভিন্ন পানিতে চিনি মিশিয়ে খাই। বাজার থেকে যেসব কোমল পানীয় পাওয়া যায় বেশিরভাগ সময়েই এসব পানিতে অতিরিক্ত পরিমাণ চিনি থাকে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার খাওয়া যাবেনা।

ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকায় চিনি ছাড়া লিকার চা বেশ উপকারী। চায়ের মধ্যে অনেক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। অনেক ফল ও সবজির থেকে এন্টিঅক্সিডেন্ট এর পরিমান চায়ের মধ্যে প্রায় ১০ গুণ বেশি। চিনি ছাড়া লিকার চায়ে অতিরিক্ত ক্যালোরি না নিয়েই আপনি অধিক পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাবেন। যা আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে দারুন সাহায্য করবে। এছাড়াও আপনি গ্রিন টি খেতে পারেন। গ্রিন টি খাওয়ার উপকারিতা। অনেকে মনে করেন টাইপ-২ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে দুধ তেমন উপকারী নয়। কিন্তু বর্তমানে বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, দুধ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে খুব উপকারী। রাতে দুধ খাওয়া ভালো, এতে দূরে থাকা ফ্যাট আপনার ঘুম গভীর করবে। তবে ভুলেও দুধের সঙ্গে চিনি যুক্ত করবেন না।

ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকায় আমরা গুরুত্ব দিলেও, জল পানের দিকে আমরা তেমন গুরুত্ব দেইনা। মনে রাখবেন জল সবচেয়ে ভালো পানীয়। সঠিক পরিমাণ জল খাওয়ার উপকারিতা। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে আপনার শরীরকে হাইড্রেট রাখতে হবে। জল শরীরকে হাইড্রেট রাখার জন্য কার্যকরী। কারণ অন্যান্য কোমল পানীয়র মত জল খেলে আপনাকে অতিরিক্ত চিনি এবং ক্যালরির খেতে হবে না। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে সঠিক পরিমাণে জল খান। জলের পরিমাণ কম বা বেশি যেন না হয়, সঠিক পরিমাণে জল খান। আপনি ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে আপনার রাতের খাবার তাড়াতাড়ি খাওয়া উচিত। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, ডায়াবেটিস রোগীরা যারা রাতের খাবার তাড়াতাড়ি খেয়ে ফেলে তাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ আরো সহজ হয়ে পড়ে। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে রাতের খাবার রাত ৮ টায় খেয়ে ফেলুন।


ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায়


ডায়াবেটিস রোগীকে অবশ্যই ভাত, রুটি, চিনির মতো শর্করা জাতীয় খাবার কম খেতে হবে। এছাড়াও প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং ফাস্টফুড একেবারে না খাওয়াই ভালো। সারাদিনের ডায়েটে থাকবে প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি ও ফল। এছাড়াও প্রোটিন জাতীয় খাদ্য যেমন মাছ ও মুরগির মাংস। যারা নিয়মিত দায়িত্বে থাকেন তারা ডাল ও রাজমার চাল দিয়ে প্রোটিন এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন। এছাড়াও প্রয়োজন অনুসারে ডায়েটে ভাত রুটি থাকবে। প্রত্যেক ডায়াবেটিস রোগীর জানা উচিত তার প্রতিদিন কতটুকু খাবার খাওয়া প্রয়োজন, এর থেকে বেশি খেলে রক্তে যেমন সুগারের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে তেমনই শরীরের অন্যান্য অঙ্গের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে উপরোক্ত নিয়মগুলো যথাযথভাবে মেনে চলুন। আশা করি খুব দ্রুত আপনি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। সকলে ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন